এই ব্লগটি সন্ধান করুন

শনিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

----- দুরন্ত পরাজয় এবং একজন সম্ভাবনাময় খেলোয়ার এর ক্যারিয়ার এর অপমৃত্যু-------

 
সবাই বলে আমি নাকি অস্থির... আমিও নিজেও সেটা অস্বীকার করি না... আমি সব জায়গা তেই নেতৃত্ব দেই... এলাকার খেলাধুলাতেও ছিল আমার নেতৃত্ব। আমাদের গ্রামের নাম অনুসারে আমাদের একটা ক্লাব আছে নাম নলজানী বয়েজ ক্লাব। আমাদের ক্লাব এর মূল কাজ হচ্ছে সামাজিক উন্নয়ন ও খেলাধুলা। শুরু থেকেই সর্ব ক্ষেত্রে আমার ক্লাব ছিল অত্যান্ত সফল। তখন ২০০৪ সাল আমাদের ক্রিকেট দল ছিল অত্র এলাকার দুরন্ত একদল। আমরা মাঠে নামলেই জয় নিশ্চিত এমন একটা কথা প্রচলিত হয়ে গিয়েছিল। তো জয়ের স্মৃতি বললে রাত ফুরিয়ে যাবে। কিন্তু আজ আমি বলব দুরন্ত এক ম্যাচ এর কথা দুরন্ত এক পরাজয় এর কথা। অনেকেই বলবে পরাজয় সে আবার দুরন্ত হয় কি করে। কিন্তু মজাটা তো সেখানেই।
তো মুল কথায় আসি, একদিন বিকেল এ আমরা মাঠে খেলছিলাম। আমাদের পাশেই এলাকার মেয়েরাও খেলছিল। মেয়েদের মধ্যে আমাদের বোন বান্ধুবী সবাই ছিল। তো আমরা দুষ্টামি করে ওদের দিকে বল মারছিলাম। তো হটাত দেখলাম ওরা কি যেন আলোচনা করতেছে। তো লিজা আপু ওদের লিডার ছিল। তিনি এসে আমাদের ক্রিকেট ম্যাচ খেলার চ্যালেঞ্জ দিয়ে বসলেন। তার কথা শুনে আমরা তো হাসতে হাসতে শেষ। যাহোক আমরা ভাবলাম দেই আজ ওদের একটা চূড়ান্ত লজ্জা। খেলার শর্ত হচ্ছে যারা জিতবে তারা মাঠে খেলবে।
যথারীতি টচ হলো মেয়েরা ব্যাটিং নিল। ১০ ওভার এর খেলায় ওরা ৪৫ রান করল যা আমাদের বোলার রাই করতে পারে... তারপর আমাদের ব্যাটিং... প্রথম ওভার এ আশ্চর্য হলেও সত্য আমাদের বিপক্ষে মেয়েদের ফাস্ট বোলার (হাস্যকর বোলিং বলার অপেক্ষা রাখে না) হ্যাট্রিক সহ ম্যাডেন ওভার নিল। আমরা তো পুরা বেকুব হবার পথে। যাই হোক এটা আপসেট ধরে নিয়ে আমি( দলের সেরা ব্যাটসম্যান) ব্যাট হাতে নামলাম। যাই হোক বোলিং প্রান্তে বোলার দেখে তো আমার ভাব গেল আরও বেড়ে (বোলার এর প্রতি আমার প্রেম নামক দুর্বলতা ছিল) । যাই হোক আমি তার প্রথম বলেই উড়িয়ে মেড়ে দিলাম ছক্কা। সবাই ধরে নিল ম্যাচ আমাদের জয় এখন সময় এর অপেক্ষা। কেউ কেউ তো বলল দোস্ত এ ওভার এই খেলা শেষ করে ফেল। ততখনে দেখি তার মুখ লাল হয়ে গেছে লজ্জায়। কি আর করা খেলা তো খেলাই। পরের বল করল খুব সাভাবিক মোয়া বল... আমিও ত পা এগিয়ে গিয়ে চোখ বন্ধ করে জোরে শট নিলাম... টাস করে একটা শব্দ হল... মাথা ঘুড়িয়ে দেখি মিডল স্ট্যাম্প উলটে পড়ে আছে। ততক্ষণে তাহার উল্লাস বাঁধ ভেঙ্গেছে... তার হাসি খুব ভালো লাগত কিন্তু সেদিন আর হাসি দেখার দুরন্ত সাহস হয়। তার পরের ওভার গুলো যা হবার তাই হলো... আমার দল ১০রান এ ৫ ওভার এ অলআঊট।
পূর্ব শর্তানুযায়ী আমরা মাঠ ছেড়ে দিলাম... আমাদের দলের কেউ পরবর্তী ১ সপ্তাহ মাঠে যায়নি। আর আমি আজও মাঠে যায়নি... এই ম্যাচ এর মধ্যে দিয়ে আমার খেলোয়াড় জীবনের সমাপ্তি হয়... আর কখনো ব্যাট হাতে নেই নাই...তার পর অনেকেই বলেছে কিরে খেলিশ না কেন আমি বলেছি ইঞ্জুরি ডাক্তার না করছে
আসল কাহিনি অনেক দিন পর আজ আমার ব্লগে লিখলাম...

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন